Grate Legend Jyoti Basu

Community ( in Orkut ) Cilck on Picture 4 add

Tuesday, January 19, 2010

জ্যোতি বসু ( Jyoti Basu ) : জীবনপঞ্জি ১৯১৪-২০১০


জ্যোতি বসু : জীবনপঞ্জি ১৯১৪-২০১০


১৯১৪ : ৮ জুলাই কলকাতার হ্যারিসন রোডে, বর্তমানে মহাত্মা গান্ধী রোড, জ্যোতি বসুর জন্ম হয় । প্রথমে তাঁর নাম ছিল জ্যোতিকিরণ । কিরণ শব্দটি পরে তাঁর নাম থেকে বাদ পড়ে । কিন্তু তাঁর খ্যাতির সঙ্গে কিরণ শব্দটি ‘আসলে’ জুড়েই ছিল । ডাকনাম গনা । পিতা নিশিকান্ত বসু ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক । চিকিৎসা শাস্ত্রে তাঁর নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ছিল । মায়ের নাম হেমলতা দেবী । তিনি ছিলেন মা-বাবার তৃতীয় পুত্র। দাদা সৌরিন্দ্রকিরণ, দিদি সুধা দেবী । ঠাকুরদার চাকরি সূত্রে বাবা-কাকারা আসামের ধুবড়িতে বাস করলেও তাঁর পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার ‘বারদি’-তে । নিশিকান্ত বসু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে কলকাতায় ডাক্তারি শুরু করেন । হ্যারিসন রোডের বাড়ি ছেড়ে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি চলে আসেন বর্তমান ‘এলিট’ সিনেমার উল্টোদিকের ‘হিন্দুস্থান বিল্ডিং’-এ ।


১৯২০ : ছয় বছর বয়সে তিনি ধর্মতলার ‘লরেটো ডে স্কুল’-এ ভর্তি হন । ওই স্কুলে চার বছর পড়ার পরিবর্তে এক বছর ‘ডবল প্রমোশন’ পেয়ে তিন বছর পড়েন ।


১৯২৩ : সেণ্ট জেভিয়ার্স স্কুলে সেকেন্ড স্ট্যান্ডার্ডে ভর্তি হয়ে ইণ্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়েছিলেন ।

১৯২৪ : দিক্ষণ কলকাতায় ৫৫-এ ‘হিন্দুস্থান পার্ক’-এ নিজস্ব বাড়ি তৈরি হলে সেই বাড়িতে উঠে আসেন ।


১৯৩২ : ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন ।


১৯৩৫ : বি এ পাস করে ব্যারিস্টারি পড়বার জন্যে ব্রিটেনে যান । ভর্তি হন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি কলেজে । ইংল্যান্ডে ভি কে কৃষ্ণমেননের নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়া লিগ’ প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ভারতের স্বাধীনতার পেক্ষ কাজ করছিল, জ্যোতি বসু ছিলেন লিগের সক্রিয় সদস্য । লন্ডন, কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ছাত্রদের পৃথক ‘কমিউনিস্ট গ্রুপ’ গঠিত হয় । প্রকাশ্যে পার্টির সভ্য না হলেও গ্রুপের সদস্যরা পার্টির কাজ করতেন । পার্টির ক্লাস নিতেন হ্যারি পলিট, রজনীপাম দত্ত, ক্লিমেন্স দত্ত, বেন ব্র্যাডলে প্রমুখ। সে সময়ে বন্ধুত্ব হয় ভূপেশ গুপ্ত, স্নেহাংশু আচার্য, রজনী প্যাটেল, পি এম হাকসার, মোহন কুমারমঙ্গলম, ফিরোজ গান্ধী প্রমুখ রাজনীতিকের । ভারতের স্বাধীনতার জন্য লন্ডনে পড়ুয়া ছাত্ররা তৈরি করেন ইন্ডিয়া লিগ । এর মধ্যমণি ছিলেন কৃষ্ণ মেনন । জ্যোতি বসুর মার্কসবাদী সাহিত্য পাঠের শুরু সেখান থেকেই । ব্রিটেনে ‘ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্টুডেণ্টস’ ১৯৩৬-এর শেষ দিকে পুনর্গঠিত হলে এবং এর মুখপত্র ‘ভারতীয় ছাত্র ও সমাজতন্ত্র’ প্রকাশিত হলে তিনি সংগঠনের কাজে সাহায্য করেছিলেন । ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে ‘লন্ডন মজলিস’ গঠিত হলে প্রথমে সদস্য পরে সেক্রেটারি নিযুক্ত হন ।


১৯৩৮ : তিনি কমিউনিস্ট পার্টি অফ ব্রিটেনের সদস্যপদ পান ।

১৯৩৯ : সুভাষচন্দ্র বসু ত্রিপুরা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলে ‘লন্ডন মজলিস’ এক সমাবেশে জমায়েত হয় এবং সমাবেশ থেকেই সুভাষচন্দ্রকে অভিনন্দন-বার্তা পাঠানো হয়েছিল । সেই সমাবেশে জ্যোতি বসু ছাড়াও বক্তৃতা দিয়েছিলেন এন কে কৃষ্ণন । ব্যারিস্টারি পাস করে জ্যোতিবাবু ফিরে আসেন কলকাতায় । হাইকোর্টে যোগ দিলেও তাতে তাঁর মন টেকেনি ।


১৯৪০ : লন্ডন থাকতেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মী হিসেবে কাজ করবেন । ফেরার পথে বোম্বাইতেই ভূপেশ গুপ্ত, মোহন কুমারমঙ্গলম, অরুণ বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন । যোগ দেন পার্টিতে ।


১৯৪১ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির হাতে সোবিয়েত রাশিয়া আক্রান্ত হওয়ার পর কলকাতায় পার্টি মঞ্চ হিসেবে ‘সোবিয়েত সুহৃদ সমিতি’ · এফ এস ইউ — এবং ফ্যাসিবিরোধী লেখক ও শিল্পী সঙঘ প্রতিষ্ঠা হলে তিনি প্রথম সম্পাদক নির্বাচিত হন । হিটলার সোবিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে কলকাতায় তৈরি হয় ফ্রেন্ডস অফ সোবিয়েত ইউনিয়ন নামে সংস্থা । জ্যোতিবাবু তার আহ্বায়ক । সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে তিনি যোগ দেন
। কমিউনিস্ট হিসেবে শ্রমিক ফ্রণ্টে কাজ শুরু করেন । আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ে ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। অল ইন্ডিয়া রেলওয়েমেনসের সহ-সভাপতিও হন ।


১৯৪২ : তিনি অনুকূল ঘোষের কন্যা ছবি ঘোষকে বিবাহ করেন । বিয়ের অল্পদিন পর তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয় । জুলাই মাসে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিকে বেআইনি ঘোষণা করে ব্রিটিশ সরকার । মায়ের মৃত্যু ।


১৯৪৪ : পার্টির নির্দেশে বন্দর ও ডাক শ্রমিকদের সঙঘটিত করার কাজে হাত দেন । নানা কারণে ওই কাজে তিনি সফল হতে পারেননি । পরে তাঁকে রেলওয়ে শ্রমিকদের কাছে পাঠানো হয় । তিনি ‘বেঙ্গল আসাম রেলওয়ে ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ গঠন করতে সক্ষম হন । ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন বঙ্কিম মুখোপাধ্যায়, তিনি ছিলেন সাধারণ সম্পাদক । এ ছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়নের কাজে যুক্ত ছিলেন ।


১৯৪৫ : বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিটির সদস্য · পি সি ও — নির্বাচিত ।

১৯৪৬ : বাংলা - আসাম রেলওয়ে কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের নির্বাচনে হুমায়ুন কবিরকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছিলেন । সেই নির্বাচনে তিনি ছাড়া দার্জিলিং কেন্দ্রে রতনলাল ব্রাহ্মণ এবং দিনাজপুর কেন্দ্র থেকে রূপনারায়ণ রায় কমিউনিস্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন । তিনজনকে নিয়ে একটি পৃথক গ্রুপও গঠিত হয়েছিল । সদস্য হিসেবে তিনি যে বেতন পেতেন তা পার্টিকে দিয়ে দিতেন, পার্টি তাঁকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল । আইন সভার সদস্য হয়ে তিনি প্রথম বক্তৃতা দিয়েছিলেন ।


১৯৪৬ সালের ২৫ জুলাই । বিষয় ছিল খাদ্যসঙ্কট। তখনই তাঁর বাকচাতুর্য ও উপস্থিত বুদ্ধি তাঁকে প্রথম সারির নেতা হিসেবে চিহ্নিত করে ।


১৯৪৮ : স্বাধীন ভারতে ২৬ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হলে ওই দিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় । এটাই ছিল তাঁর প্রথম কারাবরণ । তিন মাস পর তিনি মুক্তি পান । ৫ ডিসেম্বর তিনি দ্বিতীয়বারের জন্যে বিবাহ করেছিলেনবীরেন্দ্রনাথ বসুর কন্যা কমল বসুকে ।

১৯৪৯ : পার্টি তখনও বেআইনি, গ্রেপ্তার এড়িয়ে কাজ করার জন্যে আত্মগোপন করে কাজ চালাতেন ।


১৯৫০ : সেপেটম্বর মাসে পুনরায় গ্রেপ্তার হন । হাইকোর্টের নির্দেশে


১৯৫১ এর ফেব্রুয়ারিতে মুক্তি পান ।


১৯৫০ - এর ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিউনিস্ট পার্টি বৈধ বলে ঘোষিত হয় ।


১৯৫১ : পার্টির মুখপত্র ‘দৈনিক স্বাধীনতা’ পত্রিকা নবপর্যায়ে প্রকাশিত হলে তিনি সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মনোনীত হয়েছিলেন । রাজ্য কমিটির সদস্য ।


১৯৫২ : প্রথম বিধানসভার নির্বাচনে বরানগর কেন্দ্র থেকে ৫৪.২০ অংশ ভোট পেয়ে তিনি তৎকালীন মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী হরেন্দ্রনাথ চৌধুরিকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন । বিধানসভায় পার্টির পরিষদীয় দলের নেতা, পরে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত । সেপেটম্বরে একমাত্র পুত্র চন্দনের জন্ম হয় ।


১৯৫৩ : কলকাতায় অনুষ্ঠিত কমিউনিস্ট পার্টির ষষ্ঠ রাজ্য সম্মেলনে তিনি ছিলেন সম্পাদক । ১৯৫৬, ১৯৫৮, ১৯৫৯ ও ১৯৬০ সালের রাজ্য সম্মেলনেও তিনি সম্পাদক ছিলেন । মাদুরাইতে অনুষ্ঠিত পার্টির তৃতীয় কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য । পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদ
ক । তারপর ধীরে ধীরে পলিটব্যুরোর সদস্য হন । ট্রাম-ভাড়া বৃদ্ধি আন্দোলনে অংশগ্রহণ। ভাড়া কমানোর আন্দোলনে জয়ী হন ।


১৯৫৪ : শিক্ষক আন্দোলনে অংশগ্রহণ।


১৯৫৫ : গোয়া মুক্তি আন্দোলনে যোগদান। চীন যাত্রা।


১৯৫৬ : বাংলা-বিহার সংযুক্তির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং তা রদ করেন ।

১৯৫৭ : দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনে বরানগর কেন্দ্র থেকে পুনরায় জয়লাভ করেন । বিধানসভায় কমিউনিস্ট পার্টির পরিষদীয় দলের নেতা এবং একই সঙ্গে বিরোধীপেক্ষর নেতা নির্বাচিত হন ।


১৯৫৭ - ৬৭, একটানা দশ বছর তিনি বিরোধী নেতা ছিলেন । এই পদের জন্যে প্রাপ্য বেতন ও অন্যান্য সুবিধা তিনি গ্রহণ করেননি । ঘটনাবহুল পরিষদীয় জীবনে তাঁর বক্তৃতাগুলি স্মরণীয় হয়ে আছে । চেকোস্লোভাকিয়া ও সোবিয়েত ইউনিয়ন সফর ।


১৯৫৯ : খাদ্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ। গ্রেপ্তার হয়ে ১৫ জুলাই থেকে ৯ সেপেটম্বর জেলে থাকেন । ১১-১৪ নভেম্বর জাতীয় পরিষদের মিরাট সেশনে যোগদান।

১৯৬১ : স্বেচছায় রাজ্য কমিটির সম্পাদকের পদ ত্যাগ করলে ওই পদে নির্বাচিত হন প্রমোদ দাশগুপ্ত। সোবিয়েত ইউনিয়ন সফর ।


১৯৬২ : চীন-ভারত যুদ্ধের সময় গ্রেপ্তার হন। জেলে থাকাকালীন বাবার মৃত্যু। বরানগর কেন্দ্র থেকে পুনর্নির্বাচিত। হায়দরাবাদে জাতীয় পরিষদের সভায় যোগদান। সোবিয়েত দেশ ভ্রমণ।


১৯৬৪ : ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি দ্বিধাবিভক্ত হলে তিনি সি পি আই · এম — দলে যোগ দেন । এবং সেই বছর থেকেই তিনি দলের পলিটব্যুরোর সদস্য। ৩১ অক্টোবর কলকাতায় পার্টির সপ্তম কংগ্রেসে উদ্বোধনী ভাষণ দেন ।


১৯৬৫ : ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’ প্রকাশিত। সম্পাদক জ্যোতি বসু ।

১৯৬৬ : খাদ্য আন্দোলনে আবার কারাবরণ । অসুস্থ হয়ে পড়লে জেল হাসপাতালে ভর্তি হন । মার্চের ১৪ তারিখে মুক্তি পান ।


১৯৬৭ : বরানগর থেকে আবার নির্বাচিত। প্রথম যুক্তফ্রণ্ট মন্ত্রিসভা গঠন । ২ মার্চ তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন । অর্থমন্ত্রকও তাঁর দায়িত্বে ছিল । অন্তর্কলহে যুক্তফ্রণ্ট ৯ মাসের মধ্যেই ভেঙে যায় । উত্তরবঙ্গে চা-শ্রমিকদের আন্দোলন, পরে জমি দখল, ফসল কাটা ইত্যাদিতে কৃষকদের যোগদানকে কেন্দ্র করে ২৫শে পুলিসের গুলিচালনায় ন’জন প্রাণ হারান । শুরু হয় নকশালবাড়ি আন্দোলন।


১৯৬৯ :মধ্যবর্তী নির্বাচনে বরানগর থেকে পুনর্নির্বাচিত। দ্বিতীয় যুক্তফ্রণ্ট মন্ত্রিসভায় সহকারী মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও স্বরাষ্ট্র ও সাধারণ প্রশাসন দপ্তরের ভার পেয়েছিলেন । মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখার্জি।


১৯৭০ : ৩১ মার্চ পাটনা রেল স্টেশনে তাঁকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা। আলি ইমাম নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় ।


১৯৭১ : দু’বার তাঁর ওপর আক্রমণ হয় । চেষ্টা হয় প্রাণনাশের। মধ্যবর্তী নির্বাচনে বরানগর থেকে অজয় মুখার্জিকে হারিয়ে পুনর্নির্বাচিত।


১৯৭২ : বিধানসভা নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে সি পি আই প্রার্থীর কাছে পরাজিত । ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি
, বেলজিয়াম ভ্রমণ। ব্যাপক রিগিংয়ের অভিযোগ এনে তাঁরা বিধানসভা বয়কট করেন ।


১৯৭৪ : রেল ধর্মঘট।


১৯৭৫ : ইন্দিরা গান্ধীর আমলে সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি ।


১৯৭৭ : বিধানসভা নির্বাচনে সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে সর্বাধিক ভোট লাভ করে জয়ী হন । নির্বাচিত বামফ্রণ্ট প্রার্থীদের হিসেবে মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ গ্রহণ করেন । শপথ নেন ২১ জুন । যুগোস্লাভিয়া ও ব্রিটেন ভ্রমণ।


১৯৭৯ : রোম, বেলগ্রেড, ওয়ারশ ও জেনিভা ভ্রমণ।

১৯৮০ : লন্ডন, মস্কো ও হাঙ্গেরি সফর ।


১৯৮১ : লন্ডন, জেনিভা, প্যারিস ভ্রমণ।


১৯৮২ : একই কেন্দ্র থেকে পুনরায় নির্বাচিত। মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, প্রশাসন, অর্থ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর । হিন্দুস্থান পার্কের বাড়ি থেকে উঠে আসেন রাজভবনে । ভুটান সফর ।


১৯৮৩ : সোবিয়েত ইউনিয়ন সফর । বুদাপেস্ট, প্যারিস, আমস্টারডাম ও লন্ডন যাত্রা।


১৯৮৪ : চীন ও হংকং যাত্রা করেন মে মাসে । ব্রিটিশ সরকারের আমন্ত্রণে ইংল্যান্ড এবং পরে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর । রাজ্যে নতুন শিল্পনীতি ঘোষিত হয় ।

১৯৮৫ : ইংল্যান্ড ও জার্মান ভ্রমণ। অ‘ফোর্ড, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডন স্কুল অফ ইকনমি‘ বক্তৃতা। সোবিয়েত ইউনিয়ন সফর ।


১৯৮৬ : আত্মজীবনী ‘জণগণের সঙ্গে’ প্রকাশিত। লন্ডন, প্যারিস, রোম, জেনেভা, এথেন্স, ব্যাঙ্কক ও সিঙ্গাপুর সফর ।


১৯৮৭ : সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে তৃতীয়বার বামফ্রণ্ট মন্ত্রিসভার মুখ্যমন্ত্রী। রাজভবন থেকে বাসা বদল করে সল্টলেকে ইন্দিরা ভবনে । ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর । বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করেন । এরপরও তিনি বিনিয়োগ আনার জন্য ইউরোপ, আমেরিকা যান ।


১৯৮৮ : জাপান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ভ্রমণ।

১৯৮৯ : ইংল্যান্ডে হাউস অফ কমনস-এ মার্কস মেমোরিয়াল লাইব্রেরি এবং স্কুল অফ ওরিয়েণ্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাজিড-এ বক্তৃতা। অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স ও পশ্চিম জার্মানি সফর ।


১৯৯১ : সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে জয়ী হয়ে চতুর্থবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত। ব্রিটেন সরকারের আমন্ত্রণে ইংল্যান্ড, সুইডেন ও জার্মানি সফর ।


১৯৯২ : ইংল্যান্ড, হামবুর্গ, রোম ও ফ্লোরেন্স ভ্রমণ।


১৯৯৩ : ইংল্যান্ড ও কিউবা ভ্রমণ। ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকার ।


১৯৯৪ : ইংল্যান্ড ও সুইৎজারল্যান্ড ভ্রমণ।

১৯৯৫ : পশ্চিমবঙ্গে শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাত্রা।


১৯৯৬ : সাতগাছিয়া কেন্দ্র থেকে পঞ্চমবারের জন্য ভোটে জিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত। দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে জ্যোতি বসুর নাম প্রস্তাব। ১৪ মে সি পি এম কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রে তৃতীয় জোট সরকারে সি পি এম বাইরে থেকে সমর্থন জানাবে । জ্যোতি বসু এই সিদ্ধান্তকে মনে করেন ‘ঐতিহাসিক ভুল’ । বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে গঙ্গা জলবণ্টন সমস্যা সমাধানে তাঁর বিশেষ ভূমিকা । বাংলাদেশের বারদি-তে পৈতৃক বাড়িতে যান ।

১৯৯৭ : দিল্লির রাজনৈতিক টানাপোড়েনে তাঁর বিশেষ ভূমিকা । সুরভি বন্দ্যোপাধ্যায় লিখিত ‘জ্যোতি বসু: দি অথোরাইজড বায়োগ্রাফি’ গ্রন্থ প্রকাশ। ৩০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরাল কর্তৃক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ‘বৈদগ্ধ’ পত্রিকার জ্যোতি বসু বিশেষ সংখ্যার। ‘জ্যোতি বসু’ তথ্যচিত্রের শুটিং শুরু করেন চিত্রপরিচালক গৌতম ঘোষ। জ্যোতি বসুর আত্মজীবনী ‘উইথ দ্য পিপল’ গ্রন্থটি প্রকাশ করেন বিনয় চৌধুরি। ইংল্যান্ড ও দিক্ষণ আফ্রিকা ভ্রমণ।


১৯৯৯ : ইসরায়েল ভ্রমণ । কলকাতা-ঢাকা বাস চলাচল শুরু । প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে তিনিও ঢাকা আমন্ত্রিত।


২০০০ : ২৮ জুলাই সি পি এম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের মধ্যেই হঠাৎ অসুস্থ । প্রথমে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে, পরে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয় । পরদিন সন্ধ্যায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় । ১৫ আগস্ট নিজেই জানান সেপেটম্বরের ১৫ তারিখের পর মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে অবসর নেবেন । ৩ নভেম্বর শেষবারের মতো মহাকরণ ছাড়লেন । ৫ নভেম্বর রাজারহাটে আবাসিক ভবনে শেষ সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদান । ৬ নভেম্বর নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বিদায় সংবর্ধনা এবং একই সঙ্গে
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ । একটানা ৮৫৪০ দিন মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার পর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিলেন । ‘সেণ্টার অফ ইন্ডিয়া ট্রেড ইউনিয়নস’, ‘হলদিয়া রিজিওনাল কমিটি’ পরিকল্পিত ‘জ্যোতি বসু: লাইফ অ্যান্ড টাইম’ অ্যালবাম প্রকাশিত । ৭ ডিসেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের বন্যায় কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবিতে দিল্লির বিঠলভাই প্যাটেল হাউসে ধর্নায় বসেন জ্যোতি বসু । ১০ ডিসেম্বর, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং, এইচ ডি দেবগৌড়া, রাবড়ি দেবী, প্রফুল্ল মহন্ত প্রমুখ বিশিষ্ট নেতার উপস্থিতিতে জ্যোতি বসু সংবর্ধনাসভা অনুষ্ঠিত হয় সল্টলেক যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। প্রধান উদ্যোক্তা রাজ্য বামফ্রণ্ট কমিটি । ১২ ডিসেম্বর, জলপাইগুড়ি, শহরে সংবর্ধনা। প্রসঙ্গত, এই শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে দোমহনিতে রেল-শ্রমিক অান্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর প্রথম প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক সংগ্রামে প্রবেশ ঘটেছিল ।


২০০১ : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ‘প্রশংসা বিষবৎ, নিন্দা অমৃতসমান’ । ৫৫ বছর পর শেষবারের মতো বিধানসভা ছেড়ে যাওয়ার সময় এই কথাই বলে গেলেন ।


২০০৩ : ৩০ সেপেটম্বর, স্ত্রী কমল বসুর মৃত্যু । তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর ।


২০০৪ : ১৬ আবর, উত্তরবঙ্গ সফর । ২৪ ডিসেম্বর, সিঙ্গাপুর যাত্রা।

২০০৫ : ২৭ জানুয়ারি, রাজস্থানের ‘ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ইন এডুকেশন’ · ডিমড ইউনিভার্সিটি— কর্তৃক বিশেষ সম্মান । ৩১ এপ্রিল, গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘জ্যোতি বসুর সঙ্গে’ তথ্যচিত্রের প্রথম প্রদর্শন হয় নন্দনে । ২৩ জুলাই, বাথরুমে পড়ে গিয়ে আহত । ৯ ডিসেম্বর, বসিরহাটে হেমন্ত ঘোষাল নামাঙ্কিত ভবন উদ্বোধন করেন । ২৩ ডিসেম্বর, তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, কিন্তু তিনি নিতে রাজি হননি ।


২০০৬ : ২৩ জানুয়ারি, তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়ে ‘আকাশ বাংলা প্রযোজিত’ চারটি সিডি-র সংগ্রহ ‘অন্তরঙ্গ জ্যোতি বসু’ প্রকাশিত হল । ১৪ নভেম্বর বাড়িতে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পান ।


২০০৭ : ১৭ মার্চ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডি লিট সম্মান । ১৫ জুলাই, কলকাতা পুরসভা টাউন হলে নাগরিক সম্মান দিতে চাইলে তিনি অসম্মতি জানান ।


২০০৮ : ৪ সেপেটম্বর, নিজের বাড়িতে আবার পড়ে গিয়ে কপাল ও মাথায় আঘাত । কপালে দুটি সেলাই করতে হয় । ৭ সেপেটম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন । সিটি স্ক্যান করতে হয় ১০ সেপেটম্বর । ১২ নভেম্বর, আবার পড়ে যান বাড়িতে । ৭ ডিসেম্বর, তাঁর বাড়িতে এসে সৌজন্য সাক্ষাৎকার করে যান আর্জেণ্টিনার ফুটবল খেলোয়াড় মারাদোনা।


২০০৯ : ২০ ফেব্রুয়ারি, দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে
যোগ দিতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রাজ্য দপ্তরে যান । ১২ জুলাই, বাড়িতে হঠাৎ জ্ঞান হারান । হাসপাতালে ভর্তি হন । ১৭ জুলাই, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘জ্যোতি বসুর বারদি গ্রামের বাড়ি সংরিক্ষত করা হচেছ ।’


২০১০ : ১ জানুয়ারি, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি । সতের দিনের দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটেজ্যোতি বসুর জীবনাবসান হয়

No comments:

Post a Comment